ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি নাÑ মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ শুক্রবার সকালেও মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা থানা স্থানান্তরের দাবিতে সড়ক অবরোধ, যানজট তিতাসের অভিযানে ৮শ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন আড়ালে সবাই আওয়ামী লীগকে কাছে চায় : নুর শেরপুরে গরু চোর সন্দেহে দু’জনকে পিটিয়ে হত্যা লক্ষ্মীপুর ও রাঙামাটিতে ২ লাশ উদ্ধার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২ গণতান্ত্রিক সরকার নেই বলেই বিনিয়োগ হচ্ছে নাÑ রিজভী ঢাকায় চলবে গোলাপি বাস, চড়তে লাগবে টিকেট ফেনীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩ যুবক নিহত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৯ জনের মৃত্যু মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ শ্রীপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে থানার এএসআই ক্লোজড সাঘাটার ভূমিদস্যু সুইট ও সহযোগীদের শাস্তির দাবি
ছাত্র-জনতার আন্দোলন

সহিংসতায় অর্থনীতিতে ক্ষতি সোয়া ১ লাখ কোটি টাকা

  • আপলোড সময় : ০৮-০৮-২০২৪ ১২:১৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৮-২০২৪ ১২:১৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
সহিংসতায় অর্থনীতিতে ক্ষতি সোয়া ১ লাখ কোটি টাকা
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে দেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতায় সামগ্রিক অর্থনীতিতে প্রায় সোয়া এক লাখ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরাএকই সঙ্গে তারা বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে যে পরিবর্তনটা হলো সেটা যদি ভালো খাতে বা ভালোভাবে ব্যবহার করা যায় তাহলে দেশের জন্য ভালো হবেদেশের অর্থনীতি ভালো হওয়া বা স্বাভাবিক হবে নির্ভর করবে যদি কিছুটা দুর্নীতি কমে, নতুন সরকার যদি টেকনো ক্রিয়েটিভ নেচার দেখাতে পারে তাহলে দেশ ঘুড়ে দাঁড়াবেতবে সেটা নির্ভর করবে সরকার কী করতে চায়, ভেতরের লোকজন কী রকম, তারা কতটুকু দক্ষ, কতোটুকু রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত সেটার ওপরকাজটা কঠিন তবে করা সম্ভবঅর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতির যে খাতগুলো জটিল হয়ে গেছে সেদিকেও নজর দিতে হবেআমাদের বিনিয়োগ কমে গেছে, বিদেশি বিনিয়োগও আগামীতে বাড়বে কিনা সেটা বলা যাচ্ছে নাআর অর্থনৈতিক সূচকগুলো কোন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে সেটা নির্ভর করছে পরবর্তী সরকারের পদক্ষেপে ওপরগত এক মাস সময় ধরে চলা এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দেশের মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবেএ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) এই নির্বাহী পরিচালক এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে যে পরিবর্তনটা হলো সেটা যদি ভালো খাতে বা ভালোভাবে ব্যবহার করা যায় তাহলে দেশের জন্য ভালো হবেআমরা যদি সত্যি সত্যি দুর্নীতি কমাতে পারি, পলিসিগুলো ব্যক্তি স্বার্থের পরিবর্তে দেশের স্বার্থে করতে পারি তাহলে অবশ্যই ভালো একটা রেজাল্ট আসবেতবে এটা নির্ভর করবে পরবর্তী যে সরকার আসবে তারা কীভাবে দেশটাকে ম্যানেজ করবে তার ওপরতিনি বলেন, আমার মতে পরবর্তী সরকার গঠন করতে হলে সেখানে কিছু পলিটিক্যাল এক্সপার্ট থাকবে তারা সংসদীয় কিছু বিষয় রিভিউ করবেনআর কিছু লোক থাকবেন যারা অর্থনীতি নিয়ে কাজ করবেনএই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়ার সেটা পড়ে গেছেসেটা ঠেকানোর কোনো উপায় নেইসামগ্রিক অর্থনীতিতে আমাদের প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছেআগে জুলাই মাস পর্যন্ত যেটা ছিল লাখ কোটি টাকাপরবর্তী কয়েকদিনে সেটা আরো বেড়ে হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকাসর্বমোট এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছেসেনা সমর্থিত সরকার হলে বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সেটা করছি নাকারণ যদি সরকার পরিবর্তন না হতো তাহলে সরকার হয়তো আরো রক্তের বন্যা বইয়ে দিতোতখন কিন্তু দেশের অবস্থা আরো খারাপ হতো, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হতো এই সরকারকে কেউ গ্রহণ করতো নাতিনি বলেন, সেক্ষেত্রে সরকার পরিবর্তনটা হওয়া দরকার ছিলতবে আমরা নতুন যে সরকার হবে সেটা সেনা সমর্থিত হোক চাই নাসেখানে সিভিলিয়ান সরকার হবে সেটাই আমাদের আশাযে সরকারে টেকনোক্র্যাট লোকজন থাকবেকারণ দেশটাকে টেকনিক্যালি সামনের দিকে নিতে হবেএজন্য টেকনিক্যাল লোকজন প্রয়োজনতারা দেশটাকে ঠিকঠাক করে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাবেতারপর আবার একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিতে হবেতিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ভালো হওয়া বা স্বাভাবিক হবে নির্ভর করবে যদি কিছুটা দুর্নীতি কমে, টেকনোক্রিয়েটিভ সরকারের নেচার যদি তারা দেখাতে পারে তাহলে দেশ ঘুরে দাঁড়াবেসেটা নির্ভর করবে নতুন সরকারের ওপরসরকার কী করতে চায়, ভেতরের লোকজন কী রকম,তারা কতখানি দক্ষ, কতখানি রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত সেটার ওপরকাজটা কঠিন তবে করা সম্ভবসরকার পতনের পরও যে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে সে বিষয়টা আপনি কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এটা মোটেও কাম্য নয়, এখানে সামরিক বাহিনীর সুরক্ষা দেওয়া উচিত ছিলএকই সাথে রাষ্ট্রীয় কোনো ভবন যেমন, গণভবন, সংসদ ভবন এগুলো সব আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনোভাবেই এগুলো ধ্বংস করতে দেওয়া উচিত নয়আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত, কারণ এগুলি আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদগণভবন তো শেখ হাসিনার নয়; এটা আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ, সংসদ ভবন আমাদের ঐতিহ্যবাহী সম্পদ, মন্দির, মসজিদ ধ্বংস এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়এ বিষয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়রপ্তানিকারকদের অনেক অর্ডার বাতিল হয়েছে, নতুন কোনো অর্ডার পাচ্ছে নাবায়ররাও বাংলাদেশকে নিয়ে পুনঃবিবেচনা করবেএসব বিষয় নিয়ে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির একটা বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেছেসংখ্যার হিসেবে আমরা এটা দেখতে পারবোকিন্তু সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হয়েছে আস্থাহীনতারআমরা যতোদিন পর্যন্ত দেশ স্বাভাবিক জায়গায় যেতে না পারবো ততোদিন পর্যন্ত এই অর্থনীতির ক্ষতিটা চলতেই থাকবেতিনি আরও বলেন, এ ছাড়া অর্থনীতির যেসব খাতে আমরা উন্নতি আশা করেছিলাম সেটা করতে আরো দেরি হবেআপাতত দৃষ্টিতে সমস্যা শেষ হলেও এই সমস্যাটা আরো এক দেড় মাস টেনে নিতে হবেআবার নতুন সরকারের বিদেশি অর্থায়ন, অর্থ সংগ্রহ, বিনিয়োগ এগুলো কঠিন হয়ে যাবেপ্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসের শুরু থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েবিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেএসব ঘটনায় বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছেপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি নামানো হয়একপর্যায়ে সরকার গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করেএকই দিনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়এখনো বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনীএর আগে শনিবার ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিপরিষদের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনপাশাপাশি ৪ আগস্ট দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেতারপর ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় বিক্ষোভ থেকে ৫ আগস্ট লং মার্চ কর্মসূচি দেন তারাআন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেনঅসহযোগ আন্দোলনকে সামনে রেখে তিনি কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করেনকর্মসূচিগুলো হলো-অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের পাশাপাশি রোববার সব জেলা, উপজেলা, পাড়ায়, মহল্লায় বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান; সব খুনের বিচার ও সব রাজবন্দিকে মুক্ত করাএ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে সব ক্যাম্পাস ও হল খুলে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তিনিএরপর ৫ আগস্ট সোমবার লংমার্চ শুরু হলে বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনাএ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেনএরইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেএদিন বিকেল ৩টার কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে গণভবনে প্রবেশ করেন
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স